বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ অপরাহ্ন
শিশু ও কিশোর বয়সের কথা চিন্তা করলে মনে পড়ে, মা আমাদের সব ভাই-বোনকে কঠিন শাসনে রাখতেন। অন্যদিকে বাবা আমাদের সেরকম কিছুই বলতেন না! বাবা কখনো শারীরিক আঘাত করতেন না, যা বলার মুখে বলতেন আর আমার প্রিয় জননী ছোটবেলায় হাতের সামনে যা পেতেন তাই দিয়ে কাজ সারতেন!
নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় মাথার চুল একটু বড় ছিল বলে বাবা আমাকে সরাসরি না বলে মাকে কথা শোনাচ্ছিলেন! পরদিন সকালেই সেলুনে যেয়ে চুলে আর্মি কাট মেরে এসেছিলাম।
এখন চিন্তা করলে আমার এই শাসন, অনুশাসন কেন যেন বেশ ভালই লাগে! আমাদের বাবা, মায়েরা বন্ধন পুরোপুরি আলগা করে দিতেন না, প্রয়োজন হলে লাগামটা টেনে ধরতেন আর এই লাগাম টানার ফলাফলেই হয়তোবা আজকের আমরা! অবস্থানের জন্য বলছি না বরং একজন মানুষ হিসেবে নিজেদের বোধ ও চিন্তা, চেতনার জায়গাটুকুকে ফোকাস করছি! যে পরিবেশে সন্তানদের যেই আচরণ দিয়ে বড় করতে হবে, পিতামাতার সেটি অনুধাবন করা খুব জরুরি!
এত কথার অবতারণা হতো না যদি না কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ চোখে পড়তো! লাল, নীল, সবুজ, আকাশী, হলুদ রং দিয়ে নিজেদের ঘন, লম্বা কেশরাজিকে রাঙিয়ে তুলেছে কিছু ছেলে! একে তো বিশাল লম্বা চুল তারপর উদ্ভট সব রং তারপর বাইক নিয়ে রেইস খেলা; এই হচ্ছে চুলে বিশেষ রং ধারণকারী ছেলেদের কাজ! আপনি হয়তো বলবেন যার যার রুচি কিন্তু দুঃখিত সেটি মেনে নিয়ে সুস্থ বোধ করতে পারছি না! এই ধরণের উদ্ভট সাজসজ্জাকে আমার শিষ্টাচার বহির্ভূতই মনে হয়!
কথা সেটা নয়, কথা হচ্ছে এই কিশোরদের কাছের স্বজনদের এত সুন্দর রং পছন্দ হয় কিভাবে? ব্যক্তি হিসেবে চুল হয়তো একজন মানুষের অবস্থানকে প্রকাশ করেনা, তথাপি যাদের মাঝে কয়েকটি উদ্ভট বিষয়ের একত্রে সম্মিলন ঘটে তাঁরা পরবর্তী সময়ে যে কোনো অপরাধে জড়িয়ে যেতেই পারেন!
তাই দয়া করে, দায়িত্বশীল পিতামাতাগণ যদি নিজেদের সন্তানদের লাগাম মাঝে মাঝে একটু টেনে ধরতেন তাতে আপনাদের পরিবার ও সমাজ উভয়ই উপকৃত হতো।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক: অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, পল্লবী জোন গোয়েন্দা বিভাগ (ডিএমপি)।